বন্ধ্যাত্বের কারণ কেন বাড়ছে বন্ধ্যাত্ব?

দীর্ঘ সময় কোন ধরণের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ছাড়া, সাধারণত এক বছর বা তার বেশি সময় ধরে চেষ্টার পরও গর্ভধারণে ব্যর্থ হলে তাকে ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যাত্ব হিসেবে ধরা হয়। বন্ধ্যাত্ব নারী ও পুরুষ উভয়েরই হতে পারে। বিভিন্ন কারণে বন্ধ্যাত্ব সমস্যা দিন দিন বাড়ছে।

বন্ধ্যাত্বের_কারণ:
একজন প্রাপ্ত বয়স্ক নারীর ডিম্বাশয় থেকে প্রতি মাসে একটি করে ডিম্বাণু নির্গত হয়। যদিও একজন নারী ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত প্রজননে সক্ষম হিসেব ধরা হয়, তবে ৩৫ বছরের পর থেকে প্রজনন ক্ষমতা কমতে থাকে। প্রজনন বয়সের শেষের দিকে ডিম্বাণু নিঃসরণ প্রতি মাসে নাও হতে পারে।
বন্ধ্যাত্বের অসংখ্য কারণ রয়েছে তন্মধ্যে নারী ও পুরুষের বন্ধ্যাত্বের উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হলো:

নারীর বন্ধ্যাত্বের কারণ:

  • ডিম্বাশয় থেকে ওভাম বা ডিম নিঃসরণ না হওয়া (নিয়মিত পিরিয়ডের ক্ষেত্রে পিরিয়ডের ১২-১৫ তম দিনে ওভাম বা ডিম নিঃসরণ হয়)।
  • কিছু হরমোন যেমন প্রোলাক্টিন, থাইরয়েড হরমোন ও অন্যান্য হরমোনের অস্বাভাবিক মাত্রায় নিঃসরণ।
  • জরায়ুর টিউমার যেমন ফাইব্রয়েড বা পলিপ, এডিনোমায়োসিস হলে।
  • এন্ডোমেট্রিওসিস বন্ধ্যাত্বের একটি কমন কারণ। মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, পেটে ব্যথা ইত্যাদি এ রোগের কমন লক্ষণ।
  • জরায়ুতে ইনফেকশন, ডিম্বনালি বন্ধ থাকলে
  • পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম
  • অতিরিক্ত ওজন হলে
  • দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক অসুস্থতা যেমন অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, কিডনী সমস্যা ইত্যাদি থাকলে
  • জিনগত সমস্যা
  • অতিরিক্ত মানসিক চাপ, বিষণ্ণতা কিংবা দুশ্চিন্তা।
  • অতিরিক্ত ধূমপান বা মদ্যপান করলে

পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কারণ:

  • শুক্রাণু কম উৎপন্ন হওয়া
  • শুক্রাণু বা বীর্য যথেষ্ট গতিশীল না হলে
  • শুক্রাণুর আকৃতি স্বাভাবিক না হলে
  • কোন কারণে স্বাভাবিক শুক্রাণু তৈরি ব্যাহত হলে।
  • যৌনবাহিত কোন রোগ থাকলে
  • কোন সংক্রমণ কিংবা আঘাতের ফলে শুক্রাণু বের হওয়ার পথ বন্ধ হলে
  • অতিরিক্ত মানসিক চাপ কিংবা দুশ্চিন্তা
  • অনিয়ন্ত্রিত লাইফস্টাইল, অতিরিক্ত ধূমপান বা মদ্যপান করলে
  • ডায়াবেটিস অথবা থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে
  • অতিরিক্ত ওজন হলে
  • এছাড়াও নারী পুরুষের বন্ধ্যাত্বের আরও অসংখ্য কারণ রয়েছে।

চিকিৎসা:
বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসার জন্য প্রথমে এর কারণ উদঘাটন করতে হয়। কারণের উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা শুরু করতে হয়। যে কারণে ইনফার্টিলিটি, সে কারণটির উপর গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হয়। যদিও অনেক ক্ষেত্রেই বন্ধ্যাত্বের কারণ অজানা থাকে।
বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। ধাপে ধাপে এর চিকিৎসা করা হয়। স্বামী স্ত্রী উভয়ের হরমোন, রক্ত, স্বামীর বীর্য, স্ত্রীর ওভোলেশন টেস্ট, ল্যাপারোস্কপি, হিস্টেরোস্কোপি, হিস্টেরোসালফিংগোগ্রাফি সহ বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হয়। এছাড়াও সহবাসের উপযুক্ত সময়, নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। যেদিন মাসিক হবে, সেদিনকে প্রথম দিন ধরে মাসিকের দশম থেকে ২০তম দিনকে ফার্টিলিটি পিরিয়ড বলে। এসময় গর্ভধারণের জন্য উপযুক্ত এবং সপ্তাহে অন্তত দুই তিনবার শারীরিক মিলন হতে হবে। বর্তমানে আমাদের দেশে বন্ধ্যাত্ব বা ইনফার্টিলিটি চিকিৎসা অনেক এগিয়ে গেছে। তাই বন্ধ্যাত্ব সমস্যায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ এবং সে অনুযায়ী চললে সাফল্য আসতে পারে।
সন্তান না হওয়ার কারণে অনেক দম্পতি মানসিক চাপে ভুগেন। তাছাড়া পরিবার কিংবা সমাজ এ বিষয়ে নিঃসন্তান দম্পতিকে বিব্রতকর প্রশ্নের সম্মুখীন করেন। এ ধরণের মানসিক চাপকে দূরে রেখে স্বামী স্ত্রী উভয়কে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে হবে। মানসিক চাপ সর্বক্ষেত্রে সবার জন্য ক্ষতিকর।
বন্ধ্যাত্ব বা ইনফার্টিলিটি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পরামর্শ চিকিৎসা সেবা পেতে যোগাযোগ করুন:

ডাঃ কামরুন নাহার
এমবিবিএস, ডিজিও, এমএস (অবস অ্যান্ড গাইনি)
ডিপ্লোমা ইন এআরটি এন্ড রিপ্রোডাক্টিভ
মেডিসিন (কে আই ই এল , জার্মানি)
স্পেশাল ট্রেনিং ইন ইনফার্টিলিটি এন্ড আইভিএফ (সিঙ্গাপুর এবং চেন্নাই)
স্পেশাল ট্রেনিং ইন কসমেটিক গাইনোকোলজি (দিল্লি)
ল্যাপারোস্কোপি এন্ড হিস্টেরোস্কোপিক সার্জন
কনসালটেন্ট গাইনিকোলজিস্ট এন্ড ইনফার্টিলিটি স্পেশালিস্ট

  • Call us: 09613787804
  • Click to Chat
    Scroll to Top